রাশিয়ার ‘স্পুৎনিক-৫’ টিকা কেনা এবং বাংলাদেশে উৎপাদনের বিষয় নিয়ে রুশ সরকারকে যেসব প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, দুই -তিনদিনের মধ্যে এসব প্রস্তাবের জবাব মিলবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বৈঠকে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
বৈঠকে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলমসহ অনেকে অংশ নেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, রাশিয়ার টিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, টিকার দাম নিয়ে কথা হয়েছে, টিকা কেনা ও উৎপাদন বিষয়ে কথা হয়েছে। রাশিয়ার জবাব পাওয়া যাবে দুই-তিনদিনের মধ্যে। চীনের কাছ থেকে যে পরিমাণ কিনছি সেরকমই চেয়েছি । কিন্তু তাদের সেই সক্ষমতা আছে কি না আমার জানা নেই।
তিনি বলেন, আমার তাদের কাছ থেকে টিকা কেনা ও দেশে টিকা উৎপাদনের বিষয়ে বলেছি। রাশিয়া বলেছে তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলে জানাবে।
দাম কত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাম এখন বলতে পারব না, এটা গোপন রাখা হয়েছে।
চীন থেকে আমরা দেড় কোটি নিচ্ছি ,রাশিয়ার কাছ থেকে কি আমরা এই পরিমাণ নেব কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, তারা বলেছে যে তারা নিজের মধ্যে আলোচনা করে আগামী সোমবার বা মঙ্গলবার জানাতে পারবে।
২৩ এপ্রিল ফর্মুলা গোপন রাখার শর্তে রাশিয়ার স্পুৎনিক টিকা বাংলাদেশে উৎপাদনের জন্য সমঝোতা চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ও রুশ ফেডারেশন। এই সমঝোতা সই রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হয়েছে।
এর চার দিন পর ২৭ এপ্রিল ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানায়, মে মাসের মধ্যেই ৪০ লাখ ডোজ স্পুৎনিক-৫ টিকা পৌঁছাচ্ছে দেশে। সরকার টু সরকার (জি টু জি) চুক্তির মাধ্যমে এই টিকা আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।
রাশিয়াসহ পৃথিবীর সাতটি দেশে এই টিকার ব্যবহার চলছে জানিয়ে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ব সংস্থা অনুমোদন না দিলেও, এটি মানুষের দেহে প্রয়োগ করতে পারব। জরুরি প্রয়োগে আমরা অনুমোদন দিয়েছি।’
রাশিয়ার টিকা দেশে উৎপাদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। টিকা তৈরির সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। তিনটি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানির টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। এগুলো হলো ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস, হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও পুপলার ফার্মাসিউটিক্যালস।
বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারত নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে সিরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ডের টিকার রপ্তানি গত ২৪ মার্চ স্থগিত করে। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী আগস্টের শেষ পর্যন্ত টিকা রপ্তানিতে বিলম্ব হতে পারে।
কোভ্যাক্সের আওতায় ১৮০টি দেশও সিরাম উৎপাদিত টিকা পাওয়ার কথা। কিন্তু রপ্তানি স্থগিত হওয়ায় এ সব দেশও টিকা পাচ্ছে না। ফলে সিরামের কাছ থেকে টিকার নতুন চালান পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এই সংকট কাটাতে টিকার বিকল্প উৎস খুঁজছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে রাশিয়ার পাশাপাশি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করছে সরকার।